ট্রেনে এবার এটিএম! মধ্য রেলের অভিনব উদ্যোগ যাত্রীদের জন্য নতুন স্বস্তির বার্তা
নিজস্ব প্রতিবেদন, নয়াদিল্লি: যাত্রাপথে কখনও হঠাৎ কিছু কেনার দরকার পড়ে, কিন্তু সঙ্গে যদি প্রয়োজনীয় নগদ না থাকে, আর মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ইউপিআই-ও কাজ না করে—তাহলে? এবার থেকে সেই সমস্যা মিটতে চলেছে রেলযাত্রার মাঝেই। মধ্য রেল চালু করেছে অভিনব পরিষেবা ‘এটিএম অন হুইলস’।প্রায়শই দেখা যায়, যাত্রীরা ট্রেনে উঠে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে ডিজিটাল লেনদেনে সমস্যায় পড়েন। আবার নিরাপত্তার কারণে অনেকেই বেশি নগদ টাকা সঙ্গে রাখতে চান না। এই দুই সমস্যার সমাধান করতে এবার রেলের কামরাতেই বসানো হচ্ছে এটিএম, যেখানে যাত্রীরা সহজেই ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলতে পারবেন।এই পরিষেবাটি আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে পঞ্চবটী এক্সপ্রেসে।যা মহারাষ্ট্রের মনমাড থেকে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস পর্যন্ত যাত্রা করে। যাত্রীদের জন্য এটিএম বসানো হয়েছে ট্রেনের একটি মিনি-প্যান্ট্রি জায়গায়, যেখানে বিশেষ ইনস্টলেশন এরিয়া তৈরি করেছে রেলের মেকানিক্যাল বিভাগ।রেল বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীদের প্রয়োজন এবং নিরাপত্তাকে মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ। এই এটিএম ব্যবস্থার ফলে যাত্রাপথে কেনাকাটায় কোনও বাধা থাকছে না, আবার অতিরিক্ত নগদ টাকার ঝুঁকিও এড়ানো যাবে।এই উদ্যোগটি এসেছে নন-ফেয়ার রেভিনিউ (NFR) অর্থাৎ ভাড়া না বাড়িয়ে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থার অংশ হিসেবে। ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্র ট্রেনটিতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দিচ্ছে। জানা গেছে, ২৫ মার্চ রেলের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর ২ এপ্রিল ব্যাঙ্কের তরফে প্রস্তাব জমা পড়ে এবং ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এই পরিষেবা।
পশ্চিম রেলের ভুসাওয়াল শাখার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) ইতি পাণ্ডে জানালেন, পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার পর যন্ত্রটির কার্যকারিতা নিয়ে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। তাঁর কথায়, “এই পরিষেবা চালুর ফলে চলন্ত ট্রেনেই যাত্রীরা প্রয়োজনীয় নগদ তুলতে পারছেন, যা এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এখন নজর রাখা হচ্ছে এটিএমের পারফরম্যান্সের উপর—যেভাবে কাজ করছে, তাতে ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখা যাচ্ছে।”তিনি আরও বলেন, যাত্রী ভাড়া ছাড়াও রেল কীভাবে বিকল্প পথে আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নতুন এই পরিষেবা পেয়ে পঞ্চবটী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা ভীষণই সন্তুষ্ট। যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এটিএমটি ট্রেনের একটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় স্থাপন করা হয়েছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাকি ২১টি কামরার যাত্রীরাও খুব সহজেই এই এটিএম-এ পৌঁছাতে পারেন। আপাতত পরীক্ষামূলক পর্যায়ে একটিমাত্র ট্রেনে চালু হয়েছে এই পরিষেবা। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের সাড়া যদি আশানুরূপ হয়, তাহলে দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনেও ধাপে ধাপে এই সুবিধা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।রেলের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতের স্মার্ট রেল ব্যবস্থারই ইঙ্গিত দিচ্ছে—যেখানে যাত্রীরা হবেন আরও বেশি সুরক্ষিত, স্বচ্ছন্দ এবং প্রযুক্তিনির্ভর।
Post Comment