এসএসসি মামলায় বড় সিদ্ধান্ত, যোগ্য প্রার্থীরা ফের স্কুলে ফিরতে পারবেন: জানাল সুপ্রিম কোর্ট
নয়াদিল্লি, ১৭ এপ্রিল: বহু প্রতীক্ষিত এসএসসি মামলায় আংশিক স্বস্তির খবর এল ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য। দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, যাঁরা কোনও প্রকার দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন বা নিয়োগে অসঙ্গতির কারণে বাতিলের তালিকায় পড়েননি, তাঁরা আপাতত আবার স্কুলে কাজে ফিরতে পারবেন।রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ধস আটকাতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছিল। সেই আবেদন বিবেচনা করেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়।তবে এ নির্দেশ শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য এর কোনও প্রভাব পড়বে না। তাঁদের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী নির্দেশই বহাল থাকবে।আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকারকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুনরায় পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। তার আগেই, অর্থাৎ ৩১ মে’র মধ্যে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত হলফনামা আদালতে জমা দিতে হবে।তবে আপাতত স্বস্তি পেলেও শিক্ষাকর্মীদের (অশিক্ষক কর্মী) জন্য আলাদা করে কোনও ঘোষণা এই রায়ে করা হয়নি।এই রায় রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ একসঙ্গে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষকের চাকরি চলে গেলে শিক্ষার মান ও পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেয়। দুর্নীতির অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আর সেই সঙ্গে বহাল রাখা হয় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশও। রায়ের জেরে ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়। আদালতের নির্দেশ ছিল, তাঁরা ইতিপূর্বে পাওয়া বেতনও ফিরিয়ে দেবেন।সিবিআই তদন্তে বহু প্রার্থীর ‘অযোগ্যতা’ প্রমাণিত হলেও, সেই তালিকায় পড়ে গিয়েছিলেন বেশ কিছু যোগ্য প্রার্থীও। তাঁদের ক্ষেত্রেও চাকরি চলে যাওয়ায়, রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।এই পরিস্থিতিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আদালতে জানায়, রাজ্যের প্রায় ৯,৪৮৭টি মাধ্যমিক ও ৬,৯৫২টি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক সঙ্কট চরমে পৌঁছাবে। তাই যাঁরা কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন, এমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অন্তত চলতি শিক্ষাবর্ষ অথবা নতুন নিয়োগ না-হওয়া পর্যন্ত কাজে বহাল রাখার আবেদন করা হয়।রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থিতি ফেরাতে এই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয়, এখন সেদিকেই নজর শিক্ষাক্ষেত্রের অভিজ্ঞ মহলের।
Post Comment