‘সর্পদেবতাকে উৎসর্গীকৃত কর্ণাটকের সুব্রহ্মণ্য মন্দির সবচেয়ে ধনী মন্দির, এই বছরে আয় ১৫৫.৯৫ কোটি টাকা’

দক্ষিণ কর্নাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার এক শান্ত পাহাড়ি জনপদ, সুব্রহ্মণ্য গ্রাম। এখানেই রয়েছে ঐতিহাসিক কুকে সুব্রহ্মণ্য মন্দির, যা কুমারধারা নদীর তীরে, সবুজে ঘেরা পশ্চিমঘাট পর্বতমালার কোলে অবস্থিত। মন্দিরটি দক্ষিন ভারতের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত, যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।এই দেবস্থান দেবতা কার্তিকেয় বা মুরুগানকে উৎসর্গ করা হলেও, এখানে তিনি সর্পদেবতার রূপে পূজিত হন। ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, যাঁরা ‘নাগদোষ’ বা ‘সর্পদোষ’-এ ভুগছেন, তাঁরা এই মন্দিরে এসে নির্দিষ্ট আচার-অনুষ্ঠান পালন করে মুক্তি পাওয়ার আশায় থাকেন। ‘সর্প সংস্কার’ এবং ‘নাগপ্রতিষ্ঠা’র মতো পবিত্র আচার এখানে প্রতিদিন পালিত হয়, যার টানে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তেরা ছুটে আসেন।প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন এই মন্দিরে। মন্দিরটি সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট এবং বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে দর্শনার্থীদের জন্য।

মন্দির শুধু ধর্মীয় গুরুত্বে নয়, আর্থিক দিক থেকেও কর্নাটকের শীর্ষস্থানে রয়েছে। কর্নাটক সরকারের ‘হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য তহবিল বিভাগ’-এর আওতায় পরিচালিত এই প্রাচীন মন্দিরে ভক্তদের ঢল যেমন দেখা যায়, তেমনি এর আয়ও রীতিমতো চমকে দেয়।মন্দিরে নিয়মিত ‘সর্পদোষ’ নিবারণ ও অন্যান্য বিশেষ পূজা-আচার পালন করতে আসেন অসংখ্য ভক্ত। মন্দিরের আয়ও মূলত এই অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমেই হয় বলে জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষের এক সূত্র।সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মন্দিরের আয় পৌঁছেছে ১৫৫.৯৫ কোটি টাকায়, যা আগের বছর ছিল ১৪৬.০১ কোটি।এই ক্রমবর্ধমান আয় মন্দিরের প্রতি মানুষের গভীর বিশ্বাস, আস্থা এবং ভক্তিরই প্রতিফলন।বিপরীতে বার্ষিক ব্যয় ছিল প্রায় ৮০ কোটি টাকা।আয়ের দিক থেকে কর্নাটকের মন্দিরগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে এই সুব্রহ্মণ্য মন্দির। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চামরাজনগরের মালে মহেশ্বর মন্দির, যার আয় হয়েছে ৩১ কোটি টাকা। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে কোল্লুর বিখ্যাত শ্রী মুকাম্বিকা মন্দির, যাদের বাৎসরিক আয় ২০ কোটি টাকার আশেপাশে।এই পরিসংখ্যান শুধু ভক্তির গভীরতা নয়, ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এসব মন্দিরের গুরুত্বও স্পষ্ট করে তোলে।

Post Comment

You May Have Missed