উধমপুরে জঙ্গি সংঘর্ষে শহিদ বাংলার সন্তান ঝন্টু আলি শেখ
পহেলগাঁও, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ : জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার পর রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোরদার তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর ছিল, উধমপুর এলাকায় কয়েকজন জঙ্গি লুকিয়ে আছে। সেই খবরের ভিত্তিতেই তল্লাশি শুরু করে যৌথ বাহিনী। তবে তল্লাশির মাঝেই জঙ্গিরা আচমকা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। সেনার তরফ থেকেও পাল্টা জবাব দেওয়া হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র গুলির লড়াই হয়। সেনার তরফে জানানো হয়েছে, এই সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ৬ প্যারা স্পেশাল ফোর্সের জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ। সেনার হোয়াইট নাইট কর্পস এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছে, গুলিতে আহত হওয়া জওয়ানকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।এই ঘটনার আগে মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকায় সংঘটিত হামলায় অন্তত পাঁচজন পাকিস্তানি এবং দুই কাশ্মীরি জঙ্গির জড়িত থাকার তথ্য সামনে এসেছে। এনআইএ ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে এবং সন্দেহভাজন তিন জঙ্গির স্কেচ প্রকাশ করেছে। তাদের মাথার দামও ঘোষণা করা হয়েছে ২০ লক্ষ টাকা।সন্দেহভাজনদের নাম প্রকাশ্যে এসেছে—আসিফ ফৌজি, সুলেমান শাহ ও আবু তালহা। কোডনেম হিসেবে তারা পরিচিত মুসা, ইউনুস এবং আসিফ নামে। গোয়েন্দাদের মতে, এর আগেও পুঞ্চ এলাকায় সন্ত্রাসমূলক কাজে তারা জড়িত ছিল।শহিদ হওয়া জওয়ানের আত্মবলিদানে শোকাহত তাঁর পরিবার, সহকর্মী ও গোটা দেশ। ঝন্টু আলি শেখের অসীম সাহস ও কর্তব্যপরায়ণতা স্মরণে রেখে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।
জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি তৎপরতা রুখতে সেনার ব্যাপক অভিযান, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার লাসানা জঙ্গলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাহিনী ওই অঞ্চলে পৌঁছায় এবং তল্লাশি জোরদার করা হয়। গত ১৫ এপ্রিল এই এলাকায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষ হয়েছিল, যেখানে একজন জওয়ান আহত হন।এর পাশাপাশি রাজৌরি ও পুঞ্চের দিকে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতেও চলছে নজরদারি। মুঘল রোডে কড়া পাহারা বসানো হয়েছে। বুধবার উরি সেক্টরের সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করে দু’জন সন্দেহভাজন জঙ্গি, তবে সেনা তৎপরতায় সেই অনুপ্রবেশ ব্যর্থ হয় এবং দুই জঙ্গি নিহত হয়।২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হামলার পর থেকেই গোটা কাশ্মীর জুড়ে সেনাবাহিনীর জঙ্গি দমন অভিযান আরও তীব্র হয়েছে। ঐ হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ পর্যটক, যা সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সেনা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এখন সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে, এবং সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ অঞ্চলগুলোয় নজরদারি আরও কড়া করা হয়েছে।সন্ত্রাস দমন অভিযানে আরও কঠোরতা আনতে শুরু করেছে বাহিনী। পুরো উপত্যকা জুড়েই চলছে তল্লাশি ও নজরদারি।
Post Comment