ওড়ার কয়েক সেকেন্ডেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা: এআই-১৭১ বিমান বিধ্বস্ত, বহু প্রাণহানি
অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭৪, আরও বাড়ার আশঙ্কাঅহমদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর থেকে মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ২৭৪ জন যাত্রীর মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। যদিও সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি।সূত্রের দাবি, দুর্ঘটনায় আক্রান্ত বিমানে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর রাতেই গুজরাট পুলিশ জানিয়েছিল যে অন্তত ২৬৫ জন মারা গিয়েছেন। এরপর উদ্ধারকার্য চলাকালীন আরও দেহ ও দেহাংশ মিলেছে, ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭৪-এ পৌঁছেছে।শনিবার সকাল পর্যন্ত উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক সূত্র মনে করছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল, চিকিৎসক ও ফোরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি বড় দল কাজ করছে। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে।এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা দেশ শোকাহত। দুর্ঘটনার কারণ জানতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।মেঘানিনগরে এখনো চলছে উদ্ধার তৎপরতা। স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, বহু যাত্রীর সম্পূর্ণ দেহ মেলেনি—ধ্বংসস্তূপ ঘেঁটে কেবল দেহাংশই উদ্ধার হচ্ছে। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে কেবল একটি হাত, আবার কোথাও পায়ের অংশ। অধিকাংশ দেহ এতটাই পুড়ে গিয়েছে যে শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।গুজরাত প্রশাসন দেহ শনাক্তকরণে ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে। যাঁরা নিখোঁজ, কিংবা বিমানে ছিলেন বা ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান করছিলেন—তাঁদের পরিবারদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা এখনও মেঘানিনগরের দুর্ঘটনাস্থলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্ধারকারীদের মতে, ধ্বংসস্তূপ এতটাই ব্যাপক যে সম্পূর্ণ সরাতে আরও সময় লাগবে। এর ফলে এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না ধ্বংসাবশেষের নিচে কেউ আটকে আছেন কি না। উদ্ধার অভিযান সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পরেই নিহতের নির্ভরযোগ্য সরকারি পরিসংখ্যান সামনে আসবে।
১২ জুন, দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল এআই-১৭১ ফ্লাইটটি। বিমানে ছিলেন মোট ২৪২ জন—যার মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী এবং বাকিরা পাইলট ও ক্রু সদস্য। মাত্র কয়েক সেকেন্ড পরই বিমানটি দিকভ্রান্ত হয়ে একটি আবাসিক ভবনে আছড়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘটে বিস্ফোরণ।যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ছিলেন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডার নাগরিক। এই দুর্ঘটনায় একমাত্র জীবিত ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন বিশ্বাসকুমার রমেশ, যিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। বাকিরা কেউ বেঁচে নেই বলে নিশ্চিত করেছেন উদ্ধারকারীরা। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীও। তাঁর মৃত্যুর খবর গোটা রাজ্যে শোকের ছায়া ফেলেছে। বিপর্যয়ের প্রকৃত কারণ জানার জন্য উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। ততদিন পর্যন্ত, মেঘানিনগরে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও হয়তো চাপা পড়ে আছেন আরও মানুষ—এই আশঙ্কায় তৎপর রয়েছে প্রশাসন। অহমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছু মুহূর্তের মধ্যেই মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১৭১ নম্বর ফ্লাইট। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, বিমানটি হঠাৎ করেই দিকভ্রান্ত হয়ে বিজে ম্যাডিক্যাল কলেজে ধাক্কা খায়।ধাক্কার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, এবং মুহূর্তের মধ্যে গোটা বিমান আগুনে জ্বলে ওঠে। দুর্ঘটনাস্থল ছিল অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যার ফলে বিমানের ধ্বংসাবশেষ এবং আগুনের তাপে আশেপাশের বহু মানুষও প্রাণ হারান বা গুরুতর আহত হন।ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনও পর্যন্ত বহু মৃতদেহ ও দেহাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাদের স্থানীয় সিভিল হাসপাতাল ও বিজে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বহু আহতের অবস্থা সংকটজনক।প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে বিপর্যয় মোকাবিলা দল, পুলিশ ও দমকল বাহিনী দ্রুত পৌঁছে যায় এবং উদ্ধারকাজ শুরু করে। এখনো পর্যন্ত দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও, এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।দেশজুড়ে এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
1 comment